বুধবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৩

সোলার তৈরি করার উপকরণ

সোলার তৈরি করার উপকরণ


  

৩০ টাকা খরচ করে বোতল বাল্ব তৈরি

৩০ টাকা খরচ করে বোতল বাল্ব তৈরি 



একটি ১ বা ১.৫ লিটার সমপরিমানের প¬াষ্টিক অথবা কাঁচের বোতল, যা বাতি হিসেবে কাজ করে থাকে। ওই বোতলে বিশুদ্ধ পানি ও ৩ চামচ (১০ মিলিলিটার) ব্লিচ কিংবা তরল ক্লোরিন দ্রবন মিশ্রিত করে বোতলের মুখ ভালভাবে গালা দিয়ে বন্ধ করতে হবে। এরপর ১ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১ ফুট প্রস্ত আয়তন বিশিষ্ট একটি টিন মাঝখানে ছিদ্র করে বোতলের গায়ে লাগাতে হবে। বাড়ি বা বাসার ছাদের টিনটি বোতলের পরিমাপে ছিদ্র করে ওই স্থানে বোতল স্থাপন করতে হবে।
এটি স্থাপনের সময় বোতলের ১ তৃতীয়াংশ টিনের উপরিভাগে এবং ২ তৃতীয়াংশ ঘরের ভিতর রেখে বোতলটি বসাতে হবে। বৃষ্টির পানি ঘরে প্রবেশ না করার জন্য বোতলের চতুর্দিকে গালা দিয়ে শক্ত করে আটকে দিতে হবে। দিনের বেলায় সূর্যের আলো বোতলের উপরের অংশে পড়লে সে আলো প্রতিফলিত হয়ে বোতলের পানির সাহায্যে ঘরের ভিতর সমানভাবে আলো ছড়িয়ে পড়বে। যা ৫৫ ওয়াটের একটি এনার্জি বাল্বের আলোর সমতুল্য। রাতের বেলায় বোতলের মধ্যে রাস্তার কোন বাতির আলো পড়লে তাও প্রতিফলিত হয়ে ঘর আলোকিত করবে।
বোতলে ক্লোরিন অথবা ব্লিচ মিশ্রিত পানি পরবর্তী ৫ বছর পর্যন্ত বদলাতে হবেনা। অর্থা একটি বোতল বাল্ব তৈরি কারে বাড়িতে স্থাপন করলে সূর্যের আলো থেকে এই বাল্বটি কোন খরচ ছাড়াই টানা ৫ বছর পর্যন্ত নিয়মিত আলো দিয়ে যাবে।


ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই বাল্ব তৈরি করতে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পরে। বাণিজ্যিকভাবে প্রস্তুত করলে খরচ আরো কমে ২০ টাকায় প্রস্তুত করা সম্ভব হবে। এই বাল্ব ব্যবহারে কোন বিদ্যুৎ খরচ নেই। সূর্যের আলো-ই এই বাল্বের মুল বিদ্যুৎ শক্তি। এ প্রযুক্তি প্রস্তুতকরনে প্রয়োজনীয় দ্রব্যগুলো সহজলভ্য। এটি পরিবেশ বান্ধব ও এর দ্বারা কোন প্রকার দুর্ঘটনার ঝুঁিক নেই।

দেশে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন 

বছরে ৩২০ টন স্বর্ণ যাচ্ছে ইলেক্ট্রনিক পণ্যে!

বছরে ৩২০ টন স্বর্ণ যাচ্ছে ইলেক্ট্রনিক পণ্যে!


ডেসটিনি ডেস্ক
প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে ৩২০ টন সোনা, যার বাজার মূল্য ১ হাজার কোটি বৃটিশ পাউন্ডেরও বেশি। আর এই সোনার সামান্যই আবার আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য থেকে। বিস্ময়কর এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ঘানার আক্রায় ই-ওয়েস্ট একাডেমির মিটিংয়ে। ই-ওয়েস্ট একাডেমির মিটিংয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রতি বছর ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট তৈরিতে যে পরিমাণ সোনা ব্যবহার করা হচ্ছে, তার শতকরা ৮৫ শতাংশই হারিয়ে যাচ্ছে ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য পদার্থের সঙ্গে। এর মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ পুনরায় আহরণ করা সম্ভব হচ্ছে। টেকনোলজি কোম্পানিগুলো সোনার পাশাপাশি প্রতিবছর ব্যবহার করছে ৭ হাজার ৫০০ টন রূপা। বিশেষজ্ঞরা আরো জানান, বর্তমানে পৃথিবীর মাটির নিচের খনিগুলোতে যে পরিমাণ মূল্যবান আকরিক ধাতু রয়েছে, তার চেয়ে ৪০ থেকে ৫০ গুণ বেশি ধাতু রয়েছে ইলেকট্রিক গ্যাজেট ওয়েস্টে। অরেঞ্জ নিউজ।

বিদ্যুৎ সঙ্কট

বিদ্যুৎ সঙ্কট



যেকোনো একটা দেশে উন্নতির মাপকাঠি হলো মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহারের পরিমাণ। একটা সময় ছিলো মানুষ বিদ্যুতের কথা বললেই কাপ্তাই পানি বিদ্যুতের কথা বুঝতো এবং ভাবতো বুঝি পানি দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়, এজন্যই মনে হয় গ্রীষ্মকালে লোডশেডিং বেড়ে যায়। অথচ বাংলাদেশে তখন বিদ্যুতের একটা বিশাল অংশ উৎপন্ন হতো গ্যাস আর কয়লা দিয়ে। দাঁতের মর্যাদা বুঝলো যখন তখন অলরেডি দাঁত পোকায় খেয়ে গেছে।  যখন বাসাবাড়ীতে গ্যাসের অভাব পড়লো, রাতের বেলা মোমবাতি জ্বলতে লাগলো তখন মানুষ ধীরে ধীরে বুঝতে পারলো যে পানি ছাড়াও গ্যাস-কয়লা দিয়েও বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিদ্যুৎ চলে গেলেই ধরে নেয় সেটা ঘুষখোর ইঞ্জিনিয়ারদের দোষ এবং তাদের গোষ্ঠি উদ্ধার করে দেয় নিমিষেই। অথচ লোডশেডিং বিষয়টা দীর্ঘদিনের অদূরদর্শীতার ফসল। এর জন্য পলিসি মেইকাররা যেমন দায়ী তেমনি দায়ী দূর্নীতিবাজরা। বেশ কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে গ্যাসের আধিক্য ছিলো। তখনকার প্রেক্ষাপটে গ্যাসচালিত পাওয়ার প্ল্যান্টের চিন্তা একটা দূরদর্শী এবং প্রশংসনীয় সিদ্ধান্ত বলা বাহুল্য। কিন্তু এখন গ্যাসচালিত প্ল্যান্টগুলোর আয়ু শেষের দিকে এবং গ্যাসও সংকটে। কাজেই নতুন কিছু চিন্তা করার সময় চলে এসেছে। যদিও সেই চিন্তায় দূরদর্শীতার অভাব সাধারণের চোখেই স্পষ্ট।
মাত্র কিছুদিন আগেও বাংলাদেশ ফার্নেস অয়েল (এফও) রপ্তানী করতো। সেটা দেখেই কিনা তড়িঘড়ি করে বেশ কিছু ফার্নেস অয়েল পাওয়ার প্ল্যান্ট বসানোর প্রক্রিয়া হাতে নেয়া হলো। কিন্তু এখন সেই প্ল্যান্টগুলো অপারেশানে যাওয়ার আগেই দেশে এফও ঘাটতি দেখা দিলো। কাজে কাজেই এবার প্ল্যান্টের ফিতা আর কাটা হয় না। এফও দিয়ে তো আর গাড়ী চলে না যে সেটা বাড়ীর পাশের পেট্রোল পাম্পেই পাওয়া যাবে। সেটা প্ল্যান্টে নিয়ে যেতে হবে হয় ট্রাক কিংবা সাশ্রয়ী ট্রান্সপোর্ট হিসেবে ট্রেন ব্যবহার করে। কিন্তু সিংহভাগ প্লান্টই এমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত যেখানে রেললাইন নাই। এসব প্লান্টের মাত্র অর্ধেকে ডুয়েল ফুয়লের ব্যবস্থা আছে (অর্থাৎ দু’ধরণের জ্বালানীতে চলে); কিন্তু পরিতাপের বিষয় সেই দ্বিতীয় ফুয়েলটাই আবার বিলুপ্তপ্রায় গ্যাস। (আমার বাসার সামনের রেললাইন দিয়ে অবশ্য দোহাজারী ১০০ মেগাওয়াট প্লান্টে এফও বাহী মালগাড়ী যায়, যেটা দেখে মন জুড়িয়ে যায়। এফও টা আমাদের প্ল্যান্টেই রিফাইন করা হয় কিনা।)
বর্তমানে দেশে প্রচুর রেন্টাল/আইপিপি পাওয়ার প্ল্যান্ট দিয়ে যোগান বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মোট বিদ্যুতের প্রায় শতকরা ৪৫~৪৭ ভাগ ই এখন প্রাইভেট সেক্টরে। এতে করে সমস্যার সাময়িক সমাধান করা হয়তো সম্ভব কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে তা গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে। সমস্যা হলো প্রতিটি সরকারই মনে করে কোনোভাবে নিজেদের মেয়াদটা কোনোভাবে পার করে দিলেই হয়, দীর্ঘমেয়াদ তো পরের সরকারের আমল, সেটা নিয়ে না ভাবলেও চলবে। প্রসঙ্গতঃ আগামী এপ্রিল’১২ তে কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।
সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে রিনিউএবল এনার্জির বিকল্প নাই। কিন্তু সেই এনার্জি সল্যুশান হিসেবে যদি উচ্চাভিলাষী ভয়ানক পারমাণবিক চুল্লী স্থাপন করা হয় তবে সেটা বেশ উদ্বেগজনক। ধরেই নিলাম বেশ সেইফ এবং সিকিউর করে তা তৈরী করা হবে। কিন্তু একটা সময় যখন প্ল্যান্টটার বয়স বেড়ে যাবে স্বাভাবিকভাবেই সেটাতে দূর্ঘটনার হার বেড়ে যাবে অনেক। আর আল্লাহ না করুন একটা প্রাকৃতিক বিপর্যয় যদি হয় তো সেটা সামাল দেয়ার মত ক্ষমতা বাংলাদেশের এখনো হয় নাই। জাপানের মত প্রযুক্তিতে উৎকর্ষ একটা দেশে পর্যন্ত ম্যাসাকার হয়ে গেলো এই পারমাণবিক চুল্লী থেকে। পারমাণবিক বর্জ্যের কথা তো বাদই দিলাম। বাংলাদেশে তো টোকাইরাই সেই বর্জ্য মাটি খুঁড়ে যখন তখন বের করে ফেলতে পারে সেই চান্সও একেবারে নাই করে দেয়া যায় না।
সবচেয়ে ভালো হয় যদি জিওথার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করা যায়। মাটির একটা নির্দিষ্ট গভীরতার (প্রায় ১০০ মিটার) নিচে ভূগর্ভের উত্তাপে পানি মাটির ফাঁকে এমনিতে বাষ্পীভুত হয়ে থাকে। সেই বাষ্পকে সাকশান পাইপের মাধ্যমে তুলে এনে টার্বাইন ঘুরানোর প্রযুক্তির নাম জিওথার্মাল পাওয়ার প্ল্যান্ট। কুপ খনন করে পানি পাম্প করে অন্যদিক দিয়ে বাষ্পীভূত করে টারবাইনের ভিতর দিয়ে নিয়ে গেলেই বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। ভূ-তাপীয় সব মিলিয়ে পৃথিবীতে এ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে প্রায় আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ৷ এই বিদ্যুৎ সবুজ জ্বালানি বা গ্রিন এনার্জি। জিও থার্মাল এনার্জিতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কার্বন-ডাই-অক্সাইডকে কাজে লাগানো যায়। এতে একদিকে যেমন পরিবেশ দুষণমুক্ত থাকবে একই সঙ্গে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপ্লব সাধিত হতে পারে।
একটা সময় ছিলো দীর্ঘদিন জিওথার্মাল প্ল্যান্ট চললে মাটির নিচের পানি কমে গিয়ে ভুমি ধ্বসের আশাঙ্কা ছিলো। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন শেষে প্ল্যান্ট থেকে নির্গত বাষ্পকে ঠান্ডা করে আবার মাটির নিচে পাঠিয়ে অর্থাৎ রিসাইকেল করে এই আশঙ্কাকে অমূলক করে দেয়া হয়েছে। বাষ্পকে ঠান্ডা করতে গিয়ে আবার সেই বাষ্পের উত্তাপ ব্যবহার করে আরো কিছু পানিকে গরম করা যায়, সহজ কথায় লাভের উপর সোয়া সের। অবশ্য একটা সমস্যা আছে, সেটা হলো এই প্ল্যান্টের এফিসিয়েন্সি তুলনামূলক কম। তবে উৎপন্ন বিদ্যুতের দামও অনেক কম পড়বে। আখেরে লাভ।
ফিলিপাইন তাদের মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৭ শতাংশ সমান ১৯ শ ৬৯ মেগাওয়াট, আইসল্যান্ড মোট ৩০ শতাংশ ৫৭৫ মেগাওয়াট, আমেরিকা ৩ হাজার ৮৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জিও থার্মাল থেকে যোগান দিচ্ছে।
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও-এর বরুণাগাঁওয়ে রয়েছে এক্কেবারে প্রাকৃতিক এই পানির ধারা৷ জয়পুরহাটের কুচমায় ৪ হাজার মিটার মাটির নিচে গড়ে ১৪৫° সেলসিয়াস তাপমাত্রা রয়েছে। যা দিয়ে পানি বাষ্পীভূত করে সহজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। জয়পুরহাট থেকে দেশের যতই উত্তরে দিকে যাওয়া যায় ততই মাটির নিচের এ তাপমাত্র বাড়ন্ত পাওয়া যায়।
দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রতি ১০০মিটার মাটির গভীরতায় ২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়তে থাকে।যা রংপুর অঞ্চলে ৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রয়েছে।
সবার শেষে দুইটা কথাঃ
১. লোডশেডিং হলেই আমরা সাধারণত ইঞ্জিনিয়ারদের গালমন্দ করি। আসলে সত্যিকার অর্থে ইঞ্জিনিয়াররা প্রাণান্ত পরিশ্রম করেন বলেই লোডশেডিং অনেক কম হয়। ঈদের সময় বাড়ী না গিয়ে একজন ইঞ্জিনিয়ার আপনাকে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে সাহায্য করছেন, সেটা ভেবে কয়বার তাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন বলুন তো?
২.  বাংলাদেশের পাওয়ার সিস্টেমের সিস্টেম লস বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চাইতেও কম।